মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

প্রণয়সাক্ষী


ভোরের নরম আলোয় অগস্ত্য তীর্থের নীল জল কাকচক্ষু,
গুহা অলিন্দে যক্ষ ও বক্ষলগ্না প্রেয়সী নবপ্রেমরসে বিভোর,
তোমার স্থাপত্য শিল্পে পেয়েছে প্রাণ রুক্ষ প্রস্তরখন্ড,
তোমার কল্পনায় আজ স্বর্গীয় যক্ষ প্রেমগাথা।

আমি দেবদাসী নিত্য আসা যাওয়া এই বিষ্ণু মন্দিরে,
অলক্ষে চেয়ে থেকেছি কতদিন, আত্মমগ্ন তুমি দেখনি ফিরে;
সেদিন বসন্ত পঞ্চমী তিথি, এমনি ভোরের আলোয় ঘুমিয়ে ছিলে গুহা মন্ডপে,
জাতি পুষ্পহার এসেছিলাম রেখে অতি চুপে  চরণে তোমার,
'দেবী উপাচারের মালাটি তোমার ভূমিতে লুটায়' -
পিছু ডেকে বলেছিলে।

'হায় শিল্পী, পাথরের বুকে নিত্য জাগাও যে প্রেম, সে কি শুধুই কল্পনা!
রূদ্ধ রেখেছ হৃদয়ের দ্বার, বসন্ত সমীর সেথা মাথা খুঁড়ে মরে' -
মৃদু তিরস্কারে বলে উঠি অভিমানে ।
'ভাল করে দেখেছ কি চেয়ে, যক্ষীণির মুখখানি অনঙ্গসেনা?
ও দুটি কালো আঁখি লাগে না কি চেনা, ওই ওষ্ঠাধর পদ্ম কোরকসম সেও কি অচেনা!'
মৃদু হাসি জেগে ওঠে তোমার ঠোঁটের কোণে,
আমি আত্মবিস্মৃত হই নতুন আবেগে,  জলে ভাসে আঁখি।

বহুযুগ পরে নব পরিচয়ে এসেছি আবার সেই পুরানো আলয়ে, 
প্রস্তরে প্রস্তরে সেথা বাজে প্রণয়ের সুর,
যক্ষী- যক্ষীণী আজো সাক্ষী হয়ে আছে আমাদের চিরমিলনের।।
***
©1917 ananyapal ALL RIGHTS RESERVED