শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৪

অভিমানিনী



ভোরের আলোয় তার বার্তা পেলাম, যেন ঘুম ভাঙানিয়া গান;
হিমেল দিনের রোদের মতই মায়াময় ।
শব্দের বোনা জালে না দেখা বন্ধুর হৃদয়ের উষ্ণতা;
আমি যে কতো দামী তারই অনাবিল আশ্বাস ।
তবু যে কথা ছিল না লেখা, মনকে নাড়িয়ে গেলো তাই,
নরম জোছনার মত নীরবে চুঁইয়ে পরা অভিমান;
সে আমাকে মনে রাখে শতকাজে প্রতিদিন,
আমি আছি তার নিশ্চিন্ত বিশ্বাসে ।
আমার না দেখা বন্ধু সুদূর প্রবাসী, আমি ভুলে আছি তাকে বহুদিন । 
ভালবাসা, প্রেম, বন্ধুতা, এসবই আমার আছে জানি,
তবু এমন নীরব অভিমান, এযে অনেক দামী; অভিমানিনী ।।

বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৪

সে আজিকে হোল কতকাল

তিন মহলা বাড়ির উত্তর কোনে ছোট্ট একটা ঘর,
জানলা দিয়ে উঁকি দেয় একচিলতে আকাশ আর প্রাচীন আমগাছ।
ঘরজোড়া টেবিলের দুইপাশে দুটি উজ্জ্বল মুখ,
অভিজাত ঠাকুরদা ঘড়ির শাসন এড়িয়ে সেখানে থেমে গেছে সময়;
ঘড়ির টিকটিক যেন দুরু দুরু হৃদয়ের উন্মুখ ওঠানামা,
নীরব চোখের ভাষা বয়ে নিয়ে যায় আগামী দিনের প্রতিশ্রুতি।
অতীতের সেই প্রতিশ্রুতি আজকের অভ্যস্ত বাস্তব,
সময় আজও আছে থেমে আমাদের দুজনের মাঝে;
আজও আমার কাছে তুমি তেইশের যুবক -
তোমার চোখে আমি উনিশের তন্বী,
তবু জানি, ‘সে আজিকে হোল কতো কাল’।

***

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৪

কুল না ফুল?


শীতের দুপুরে মেয়েকে সাথে নিয়ে গেছি একজোড়া চটি কিনতে, তা অনেক দেখা দেখি করে একটা বেশ পছন্দ হল; কিন্তু আমার আধুনিকা কিশোরী মেয়ে ঠোঁট বেঁকিয়ে বলল ‘লুক অ্যাট ইয়োর ফিট মাম্মা ইটস নট কুল!’ মেয়েকে গ্রাহ্য না করে জুতোটা কিনে বাইরে এসে মনে হোল কথাটা বোধহয় মিথ্যে নয়, ঠাণ্ডায় এবং অযত্নে আমার চরণ যুগল প্রায় কাকের ঠ্যাং এ পরিণত হয়েছে। কথাটা মাথায় ঘুরছিলো, হঠাৎ রাস্তার মোড়ে একটা ভারি চমকদার বিউটি পার্লার চোখে পরল। ভাবলাম বরং এখান থেকে খানিক পদমার্জনা করিয়ে পায়ের ভোল ফেরাই; তাতে পা দুখানা আমার প্রাণপাতের না হোক অন্ততঃ প্রনিপাতের* যোগ্য তো হবে (প্রসঙ্গতঃ গীতগোবিন্দে কেষ্ট ঠাকুর ‘দেহি পদ পল্লব মুদারম’ বলে শ্রীরাধার চরণে প্রাণটা প্রায় দিয়েই ফেলেছিলেন আর কি)! যেমন ভাবা, আমরা মা মেয়ে ঢুকলাম ভেতরে; ঢুকতেই কাউনটারের মেয়েটি কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়েই আগে নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর লিখে নিল। প্রথম ধাক্কা সামলে নিজের প্রয়োজনের কথা জানালাম; যাই হোক আর একটি মেয়ে বেশ যত্ন করে ভেতরে নিয়ে বসিয়ে পদসেবা শুরু করল গরম জলের ছ্যাঁকা, নরুনের খোঁচা আর খামচাখামচির মাঝখানে হঠাৎ দেখি এক অতি সুসজ্জিতা মহিলা ভারি আন্তরিক ভাবে আলাপ করতে এলেন। মহিলার চাকচিক্যে আমি তো মোহিত, জানতে পারলাম ইনিই পার্লারের দিদিমণি, মানে মালকিন আর কি। ‘তা ভাই আপনি ফেসিয়াল কোত্থেকে করান আপনার স্কিন কিন্তু খুব ভালো’ ওঁর প্রশংসা বাক্য আমাকে শাড়ীর দোকানের কর্মচারীদের কথা মনে করিয়ে দিল, পৃথিবীতে একমাত্র ওরাই আমাকে ‘ফরসা’ বলে থাকে শাড়ী গছানোর জন্যে। ‘করিনা তাই ভালো আছে’ কথাটা কেমন মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো, তবে মহিলা ওধার দিয়েও গেলেন না। ‘সেকি ফেসিয়াল করেন না, তবে আজই শুরু করুন’। ‘কিন্তু আপনি তো বললেন স্কিন ভালো’ আমার জবাব। ‘আহা হা, এখন ভালো আছে, কিন্তু আচমকা একদিন সকালে উঠে দেখবেন চামড়া একেবারে কুঁচকে গেছে। আর ফেসিয়াল করলে বহুদিন আপনি একই রকম সুন্দরী থাকবেন’, আবার শাড়ী দোকানের কথাটা মনে হোল যা হোক বুড়ো হতে আমার তেমন আপত্তি নেই; আর তাছাড়া আপত্তি করলেই কি আর বুড়ো হওয়া ঠেকানো যাবে? কিন্তু হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে আয়ানায় নিজের কোঁচকান মুখ দেখতে ভালো লাগবে কিনা ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। তাই জিজ্ঞসা করলাম ‘তা আপনাদের কিরকম চার্জ টার্জ?’ ‘দেখুন ফেসিয়াল অনেক রকম, তবে আপনার জন্য গোল্ডটাই সবচেয়ে ভালো হবে’। ‘গোল্ড! মানে সোনা?’ আমি তো হতচকিত। ‘হ্যাঁ একেবারে ২৪ ক্যারাট’। ‘নানা সেকি, সোনার তো আজকাল এমন দাম যে নাম মুখে আনতেও ভয় লাগে। গেলো বছর মামাতো ভায়ের বিয়েতেই সোনা দিতে পারিনি আর শেষে কিনা মুখে মেখে নষ্ট করবো’! আঁতকে উঠে বলি। ‘তাহলে এক কাজ করুন আপনি বরং পার্ল ফাসিয়াল করুন, আপনাকে খুব সুট করবে’। ‘পার্ল মানে আপনি মুক্তোর কথা বলছেন? সেটাও নিশ্চয়ই আসল?’ আমার প্রশ্নে দিদিমণি মিষ্টি করে হেসে সায় দিলেন। ‘দেখুন, এক আধ ছড়া মুক্তোর হার আমার আছে বটে কিন্তু সেতো সবই হায়দ্রাবাদী। আসল মুক্ত তো কেবল মিউসিয়ামেই দেখেছি। এতটা বাড়াবাড়ি করা বোধহয় ঠিক হবে না’। ‘বেশ তবে বরং আপনি ফ্রুট ফেসিয়াল করুন, সেই বা মন্দ কি!’ মহিলাকে যত দেখছি ওঁর প্রতি শ্রদ্ধা যেন আমার বেড়ে উঠতে লাগলো। ‘তা ফ্রুট ফাসিয়ালের ব্যাপার টা কি?’ আমি বেশ কৌতহল বোধ করলাম। ছেলে ভোলানো মায়ের স্নেহে দিদিমণি বোঝাতে লাগলেন, ‘দেখুন আঙুর, পেঁপে, বেদানা, এই যে সব ভালো ভালো ফল এই দিয়েই আমাদের ফ্রুট ফেসিয়াল; স্কিনের পক্ষে ভারি ভালো’। ‘সেকি ফলের যা দাম, তা এগুলো মুখে মেখে নষ্ট না করে খেলে ভালো হয় না?’ এতক্ষণে দিদিমণির মাখন গালে একটু বিরক্তির ভাঁজ পরলো, ‘তা আপনার যা বাজেট মনে হচ্ছে তাতে আপনি হারবাল ফেসিয়াল করুন’। ‘সেটা কি রকম?’ আমি এখনো কৌতুহলি। ‘এ হোল গিয়ে শাক সবজি লতা পাতার ব্যাপারযাক তাহলে এটাই আমার পক্ষে ভালো। আজই বাড়ী গিয়ে রান্নাঘরের জিনিষ টিনিষ দিয়ে ব্যাপারটা সেরে ফেলব এখনএতক্ষণে আমি স্বস্তির নিঃশাস ফেলি। তাড়াতাড়ি পদসেবার বিল মিটিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে এলাম। দিদিমণিও আঁধার মুখে আমাকে বেড়াল পার করে বাঁচলেন।

মেয়ের মুখ দেখে অনুমান করলাম সে একটুও খুশী নয় আমার ব্যাবহারে। বুঝলাম, ফুল (fool) হতে চাইনি বলে কুল (cool) হওয়া আমার হোলনা!

* যারা আমার মত সেকেলে বুড়ি নয় তাদের সুবিধার্থে জানাই, প্রনিপাত মানে প্রণাম করা; তা আজকাল প্রণামের রেওয়াজ যেমন উঠে গেছে এসব শব্দের প্রয়োজনও তেমন ফুরিয়েছে।

*****
Published in Prothom Alo on 4th April, 2016

বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৪

একটি রূপকথা

সে অনেক কাল আগের কথা, এক ছিলেন রাজা চন্দ্রকেতু, প্রকৃতির কোলে শস্য শ্যামল তাঁর রাজ্য আনন্দপুর। রাজ্যে কোনও কিছুরই অভাব নেই, প্রজারা সুখী, খুশী রাজকর্মচারীরাও । রাজা মশাই বড় ভালো মানুষ, পরের সুখেই তাঁর আনন্দ । তবু এর মাঝেই রয়েছে একটা ছোট্ট অস্বস্তি; রাজা যুবক, দেখতে শুনতেও ভালই, কিন্তু তাঁর গায়ের রঙ বেজায় কালো । এই রঙ নিয়ে তাঁর মনে যত সংশয়;  কালো রাজা না জানি কত হাসির পাত্র । সংশয় এমন যে রাজ প্রাসাদে না আছে কোনও আয়না, না কেউ পরে কালো রঙের কাপড়; এমনকি, রাজার সামনে মন্ত্রী, আমলা কেউ ‘কালো’ কথাটাও ব্যবহার করে না পাছে রাজা দুঃখ পান । এইত সেদিন রাজদরবারে সভাকবি সুর করে ধরেছেন তাঁর নতুন কবিতা,-

আমার মন প্রাণ সব চুরি গেছে আজ,

আমি গোয়ালিনী অবলা;

শ্যাম নাম জপী সারা দিনমান,     

চুরি করে কোথায় পালালেশালা’!’


গান শুনে রাজা মশাই ভ্যাবাচ্যাকা, কবির মুখ কাঁচুমাচু; আর বাকি পারিষদের ঠোঁটে মুচকি হাসি । আসলে কবিবর লিখেছিলেন ‘কালা’ কিন্তু গাইতে গিয়ে তড়িঘড়ি ভুল শোধরাতে শেষে শ্বশুর পুত্রকে স্মরণ ।

এতো গেল রাজসভার কথা, রাজ্যের বাইরে যেতেও রাজার ভারি সঙ্কোচ । কদিন আগে প্রতিবেশী রাজ্য হুতোমপুরের রাজকন্যের স্বয়ম্বরের এলো নেমন্তন্ন; মেয়ের বাপ কতো বিনয় করে চিঠি পাঠালেন; সুশীল, ধনবান, তার ওপরে একটাও বিয়ে হয়নি এখনও, এমন জামাই পেতে কোন রাজাই না চান! কিন্তু তাতে কি, রাজা চন্দ্রকেতু অম্লশূলের বাহানায় নেমন্তন্ন ফেরত দিলেন; সুন্দরী রাজকন্নে, এতো রাজার মাঝখানে যদি কালো মুখ দেখে ঠোঁট বেঁকায়!

দিন যতো যায় মন্ত্রীরা চিন্তায় পরেন, রাজ্যে একজন রানীর প্রয়োজন নতুবা বংশলোপের সম্ভাবনা । এ অবস্থায় রাজবয়স্য অনেক মাথা চুলকে, নস্যি সেবন করে সকাল সন্ধ্যে তামুক ফুঁকে একটা বুদ্ধি বের করলেন । একদিন রাজাকে একা পেয়ে কথাটা পেড়েই ফেললেন, ‘আমি বলি কি মহারাজ, রাজকন্যেতে কাজ নেই আপনি বরং বেশ একটি সাদামাটা দেখে রানী আনুন ঘরে । পার্বতী বিনে ভোলানাথকে কি মানায়?’ ‘তোমার বক্তব্যটা কি হে ঘণ্টেশ্বর? একটু সোজা কথায় বল’ । ‘আজ্ঞে, আমাদের প্রধান্মন্ত্রীমশাই; তাঁর ধরুন গিয়ে মা ষষ্ঠীর কৃপায় গণ্ডা খানেক কন্যা, আর চেহারাপত্র তাদের বাপের মতই। হেঁ হেঁ অতএব হবু স্বামীর চেহারা নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যাথাই হবে না (প্রসঙ্গতঃ প্রধানমন্ত্রী দেবদূত বর্মাকে তাঁর চেহারার কারনে আড়ালে লোকে যমদূত বলে ডাকে)’ । কথাটা শুনে রাজার চোখের দৃষ্টি ঘন হয়ে এলো, ‘আমি বোধহয় এখন সকলের দয়ার পাত্র তাই না?’ ‘সেকি মহারাজ, না না!’ ঘণ্টেশ্বর লজ্জা পেয়ে পালাতে পথ পেলেন না ।

এক চৈতালি পূর্ণিমার সন্ধ্যেয় রাজা বিশ্রাম করছেন তাঁর রম্যদ্দানে; যূথী-মালতীর গন্ধে চারিদিক মাতোয়ারা, দখিনা বাতাসে শীতলতার আভাস । হঠাৎ ভারি মিষ্টি নারীকণ্ঠের গান ভেসে এলো কিছু দূর থেকে, এতো গান নয় যেন সুরের মূর্ছনা । চন্দ্রকেতু মন্ত্রমুগ্ধের মত এগিয়ে গেলেন গান লক্ষ করে । বাগানের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে একটি নালা, নালার ওপর কিছু দূরে দূরে বাঁধা আছে মনোরম কাঠের পুল, আর তার চারপাশে নানান ফুলের গাছ । এমনই একটি পুলের ধারে বকুল গাছের নীচে বসে আছে এক পরমা সুন্দরী মেয়ে; আকাশের চাঁদ হার মেনেছে তার  মুখশ্রীর লালিত্যে, সোনার বরণ মেয়ের রঙের ঔজ্জ্বল্যে জোৎস্নাও ম্লান। রাজা খানিক অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন রূপসীর দিকে, তারপর হঠাৎ সঙ্কুচিত হয়ে পরলেন নিজের কারনে । তিনি ফিরেই যাচ্ছিলেন নিঃশব্দে, কিন্তু গানের কথা তাঁকে আটকাল।

শ্রীমতী ভোলে শাসন বারণ কানুর দেখা পেলে -

ফুল ভোলে তার রূপের গুমোর ভোমরা কাছে এলে

কালো আঁখি ঢলঢল বাড়ায় মুখের শোভা

চাঁদের আলোয় কালো বরণ বড়ই মনোলোভা


গান কি তাঁকেই শুনিয়ে গাইছে ও মেয়ে? একি কোনও ছলনা না মনের ভুল? এতো সব ভাবনার মাঝেই সে মেয়ে এসে দাঁড়িয়েছে সামনে, তার হাতে বকুল ফুলের মালা ।

কালো-সাদা, রাত-দিন; একে মধ্যে অন্যে লীন  

আমার আলো ফুটবে কি গো তোমার আঁধার বিন?’


মালা দিয়ে রাজাকে বরণ করে নেয় দেবদুত বর্মার একমাত্র রূপবতী গুণবতী মেয়ে কাঞ্চনমালা; ঘণ্টেশ্বরকে উশকে রাজার কাছে পাঠনোর বুদ্ধি সেই দিয়েছিল তার বাবাকে ।   
এরপর ধুমধাম করে রাজার বিয়ে হল, আমার কথাটি ফুরল – নোটে গাছটি মুড়ল ।


*****

সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৪

প্রতিচ্ছবি

ফ্ল্যাটের সামনে স্কুল, জানলা দিয়ে দেখি কচি কচি হাসিমুখ;
কত কথা, কত রাগ অভিমান, অনাবিল বন্ধুতা -
ছোট জগতের ছোট ছোট সুখ, নিশ্চিন্ত পরিপূর্ণতা ।
ওদের সমবেত কলতান, যেন ভোরের পাখির গান,
ঘুম ভাঙ্গানিয়া, স্মৃতি জাগানিয়া, অতীতের পিছুটান ।।

জানলার ধারে বসে আছে ঐ মেয়ে, গাল ছুঁয়ে যায় এলোমেলো চুল,
টোল পরা হাসি, আনমনা চোখ;
মন নেই তার পড়ায়,  সে যে কোন অজানায় ভেসে বেড়ায় মিছে,
অশথ গাছের ডগায় বসা লেজ নাড়ানো দোয়েল –
আর নিশেন ওড়া দলছুট এক ঘুড়ির পিছেপিছে ।।  

অলস দুপুরে টিফিনের অবসরে, নিভৃতে একাকী
চুপি চুপি কী যে লেখে;
বন্ধুরা এসে কাড়াকাড়ি করে, আধখোলা খাতা হাতে হাতে ঘোরে
লাজে রাঙা হয় শ্যামলী মেয়ের মুখ ।
ধরা পরে গেছে ভাবুক মনের নিরব আলাপচারিতা
গোপনে লালিত একরাশ স্বরচিত কবিতা ।।  

বেলা শেষের পাখীর কলতানে, মন ফিরে আসে ঘরে;
বুঝি; এতদিন পরও সব একই আছে, ওই খেলা, গান, হাসি –
আর ওই আনমনা মেয়ে ।। 

বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৪

এক টুকরো ‘আমি’

এলোমেলো চুলে ঢাকা আধখানা মুখ,
গভীর আবেগে ভেজা ছলছল চোখ;
একান্ত নিরলে, হাতে ‘Gone with the Wind’

ফোনে বন্ধুর সাথে দীর্ঘ অলস কুজন,
বাবাকে সকাল সন্ধ্যে শাসন বারণ;
রাস্তার কুকুরছানা মমতাময়ীর বরই আপন ।

মৃদু টোকা দরজায় মাতাল ঝড়ের রাতে,
আধঘুমে বিছানায় ছুটে আসে সাহসিনী মেয়ে;
নরম হাতে জড়িয়ে ধরে নিশ্চিন্ত আরামে ।

ভোরের আলোয় দেখি তার কচিমুখখানি;
এ তো আর কেউ নয় – এ যে একটুকরো ‘আমি’!