বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫

নব বসন্তে


কৃষ্নচুড়া গাছ্টার নীচে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে ছেলেটা,
কতই বা বয়স বড়জোর ষোল;
শ্যামলা রঙ, উষ্কখুষ্কো চুল নেমে এসেছে ঘাড়ে,
মুখ্টা কেমন যেন মায়া জাগায়।
পরনে হলুদ জিন্স আর নীল টিশার্ট,
একেবারে হালফ্যাশনের।


নিঝুম বসন্ত দুপুর, শব্দ বলতে শুধু কোকিলের কুহুতান,
এরই মাঝে বাঁধভাঙা ঝরনার মত এগিয়ে আসে একদল কিশোরী মেয়ে,
তাদের মিলিত কলতানে জলতরঙ্গ, হাসিতে বসন্ত বাহার।

ঠিক মাঝখানে লাজুক ছন্দে হেঁটে চলেছে যে মেয়েটি,
টিকোলো নাকের ওপর অল্প অল্প স্বেদবিন্দু, কপালে ঝুরো চুল, মুখখানি যেন সদ্য ফোটা গোলাপ।
তার আসমানি ওড়না হালকা বাতাসে দোলে, ঢেউ তোলে আর কারো মনে।

চলে যেতে যেতে সে আড়চোখে ফিরে চায়,
আটকে যায় দৃষ্টি একজোড়া মুগ্ধচোখের চাহনিতে।
এই কয়েক মুহূর্ত্তের পাওয়া ছেলেটিকে রোজ টেনে আনে গাছ্টার নীচে।


আজ হোলি, ফাগের রঙে কৃষ্নচূড়া মাখামাখি,
ছেলেটি আজও দাঁড়িয়ে ঠিক তেমনি ভাবেই,
আজ দেখা নেই মেয়ে দলের, হয়ত মেতেছে হোরিখেলায় ঘরের প্রাঙ্গনে।
ছেলেটি চেয়ে আছে উত্সুক অপেক্ষায়, সময় থেমে গেছে তার এই নীরব পথচাওয়ায়।

ভীরু পায়ে সামনের ফ্ল্যাটবাড়ির গেট পেরিয়ে মেয়েটি সামনে এসে দাঁড়ায়,
বাসন্তী শাড়ী, খোঁপায় পলাশ, হাতে আবিরের থালি।
ছেলেটি মিষ্টি হেসে রাঙিয়ে দেয় তার গাল লাল ফাগে।

অনেক না বলা কথা বলা হয়ে যায় এক পলকে,
সময় থমকে যায় চিরতরে,
রাঙা মেয়ের লজ্জা রাঙা চাহনিতে।


এ কাহিনি চিরযুগের, চিরকালের,
ওরা ছিল যমুনার তীরে, ওরা আছে নতুনের ভীড়ে, রয়ে যাবে আগামীর সুরে।
নতুন বসন্ত আসবে বারবার, সাথে আনবে বার্তা বিশ্বাসের, ভালবাসার।

***


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন